মনোবিজ্ঞান বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
বিরাজমান সবকিছুরই রয়েছে একটি অতীত ইতিহাস। ইতিহাস মূলত গৌরবোজ্জল অতীত ও ঐতিহ্যের দর্পণ। ১৮৯২ সালের ২৭ জুন মাত্র আঠারো জন শিক্ষার্থী নিয়ে মুরারিচাঁদ কলেজের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল কালের পরিক্রমায় এবং ক্রমবিকাশের ধারায় বর্তমানে এ কলেজটি শিক্ষা নিকেতনের এক মহীরূহ ধারণ করেছে। ক্রমবিকাশের সে ধারাতেই ১৯৬৪ সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম অন্যান্য তিনটি কলেজের (টট্টগ্রাম কলেজ, ঢাকা কলেজ ও রাজশাহী কলেজ) সাথে মুরারিচাঁদ কলেজে ডিগ্রি পর্যায়ে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।
স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে যাঁরা মনোবিজ্ঞান বিভগে কর্মরত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও প্রফেসর আকতার হোসেন। তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন কর্মরত থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন এবং দুই জনই মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে যাঁরা এ বিভাগে কর্মরত থেকে অবদান রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জনাব আশরাফ আলী, জনাব যামিনী শংকর শীল, জনাব আক্কাস আলী, জনাব খায়রুন্নেসা, জনাব হাসিনা বানু, জনাব জয়নুল আবেদীন মজুমদার, জনাব নাসির উদ্দিন আহমদ এবং জনাব সুফিয়া জুলফিকার নাজমা।
জনাব নাসির উদ্দিন আহমদ দীর্ঘদিন বিভাগে কর্মরত থেকে এ বিভাগটিকে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৯৯২ সালে জনাব নাসির উদ্দিন আহমদ স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গণিত বিভাগের স্বনামধন্য-নন্দিত শিক্ষক জনাব মাসুদুর রহমান কাবিলী মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষণের প্রায় সবকটি যন্ত্রপাতি নিজ হাতে তৈরি করে দিয়ে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
বিগত ১৯৯১ সাল থেকে যাঁরা বিভাগে কর্মরত থেকে বদলি হয়ে পরবর্তী সময়ে অবসর গ্রহণ করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম জনাব আবেদুল ইসলাম, জনাব জয়নুল আবেদীন মজুমদার এবং প্রফেসর দীপালী কর।
এছাড়াও ১৯৯৩ সাল থেকে যাঁরা মনোবিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে পদোন্নতি পেয়ে/বদলী হয়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাঁরা হলেন- প্রফেসর মো: নুরুল হক চৌধুরী, প্রফেসর ড. কাজী সাইফুদ্দীন, জনাব সাজিয়া আফরিন খান, জনাব পারভীন আক্তার, জনাব আ.স.ম আজিজুল ইসলাম, জনাব নূর নবী, প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ এবং জনাব মো: জিয়াউর রহমান
১৯৯৪ সালে জনাব মো. সালেহ আহমদ এ বিভাগে যোগদান করেন। তিনি ২০০১ সাল থেকে আগস্ট ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: আলী আকবর খান এর বলিষ্ট নেতৃত্বে ২০০৪-২০০৫ শিক্ষাবর্ষে অন্যান্য তিনটি বিষয় (ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, পরিসংখ্যান) এর সাথে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। ২০০৬ সালে মনোবিজ্ঞান বিভাগ বর্তমান একাডেমিক ভবনে স্থানান্তরিত হয়। ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ এর উদ্যোগে ও তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ এ বিভাগটির সার্বিক উন্নয়নের জন্য নিরলস কাজ করে গিয়েছেন। তাঁর উদ্যোগে এ বিভাগটিতে একটি পূণাঙ্গ গবেষণাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫-২০১৬ এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ এর সার্বিক সহযোগিতায় ও প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ এর প্রচেষ্টায় বিভাগের ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়ন সাধিত হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুইটি ক্লাসরুমকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে রূপান্তর ও গবেষণাগারে সাউন্ড সিস্টেম সংযোজন। এছাড়াও প্রতিটি ক্লাসরুমে রোস্ট্রাম ও মেটিংসহ স্টেইজ সংযোজন করে মডেল ক্লাসরুম চালু।
এখন পর্যন্ত (সেপ্টেম্বর ২০১৭) এ বিভাগ থেকে আটটি ব্যাচ অনার্স কোর্স এবং চারটি ব্যাচ মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করেছে। সবেগুলো ব্যাচ অনার্স এবং মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ হয়েছে। উল্লেখ্য এ বিভাগ থেকে ২০১২ সালে অনার্স ৪র্থ বর্ষ পরীক্ষায় ৩ জন, ২০১৩ সালে ২৮ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২০ জন এবং ২০১৫ সালে ২৪ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২৪ জন ১ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়। এছাড়া ২০১২ সালে মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৩ জন, ২০১৩ সালে ৭ জন এবং ২০১৪ সালে ১১ জন পরীক্ষার্থী ১ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়।
বর্তমানে বিভাগটিতে চারটি পদের মধ্যে তিনটি পদে শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। তাঁরা হলেন- ১. জনাব শামিমা রসুল- সহকারী অধ্যাপক ২. জনাব আব্দুর রাজ্জাক-প্রভাষক ৩. জনাব মো: মাসুদ পারভেজ-প্রভাষক